Tuesday, November 9, 2010

ছাত্রীজীবনের স্মৃতি – কলেজ জীবন




ইন্টারমিডিয়েটের দু’টো বছর আমার জীবনে আলোর রশ্মি হয়ে দীপ্তি ছড়িয়েছিল বান্ধবী শিখা সাহা। ভীষণ মায়াভরা দু’টো উজ্জ্বল চোখ ছিল ওর জোড়া ভ্রূর নীচে, শ্যামলা মিষ্টি চেহারার সাথে লম্বা লালচে চুল। কিন্তু ওর সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য ছিল ওর অসম্ভব সুন্দর মনটা। কারো বিপদে সে সবার আগে এগিয়ে যেত, কারো মনখারাপ হলে সাহচর্য দিত, কারো সাহায্যের প্রয়োজন হলে সর্বস্ব দিয়ে সহায়তা করত।

কিভাবে ওর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেল আমার নিজেরও মনে নেই। তখন আমরা আবুধাবী থেকে দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে চট্টগ্রাম এসেছি। এর আগে চট্টগ্রামে কখনো থাকা হয়নি, আত্মীয়স্বজন সব ঢাকায়। বাবার সাথেই বন্ধুত্ব ছিল বেশী। কিন্তু চাকরী ছেড়ে দেশে চলে আসার পর যাদের বাবা এত বছর ধরে আর্থিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে এখন সাহায্য করার সামর্থ্য না থাকায় তাদের দুর্ব্যাবহারে আশ্চর্য তিক্ত বিরক্ত অসুস্থ হয়ে বাবাকে আমেরিকা চলে যেতে হোল। একটা নতুন জায়গায় এসে সংসারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব একা সামাল দিতে গিয়ে মা তার সন্তানদের থেকে দূরে সরে গেল। এসময় আমরা তিন ভাইবোনই ছিলাম একে অপরের একমাত্র বন্ধু।

কলেজে গিয়ে দেখি এখানকার ছাত্রীরা বিদেশে বড় হওয়া ছেলেমেয়েদের চেয়ে চিন্তাভাবনা আচারআচরণ কথাবার্তায় অনেক অগ্রসর, কাটা কাটা কথা বলে, অন্যকে কষ্ট দিতে কিছুমাত্র বিচলিত হয়না- ওদের দেখলে আমার ভয় লাগত। শিক্ষকরাও দেখি ছাত্রীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিবর্তে নিজেদের আকাশচারী ফেরেস্তার মত কিছু মনে করে সে ধরণের আচরণ করতেন। নিজেকে ভীষণ একা মনে হত। আর ক্লাসের সবাই আমার সামনেই বলত আমাকে দেখলে ওদের মনে হয় আমি মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা কোন আজব প্রাণী। এ’সময়ই আমার শিখার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তারপর থেকে দু’বছর আমাদের আর কখনো কেউ আলাদা দেখেনি।

আমি ওর নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ মনটাকে ভীষণ ভালোবাসতাম। শিক্ষক পানি চাইলে সে তিনতলা থেকে নেমে নলকূপ থেকে পানি এনে দিত, সে শিক্ষককে যিনি ওর নামটাও জানার প্রয়োজন মনে করতেন না, যাঁর মুখ থেকে একটা ‘ধন্যবাদ’ উচ্চারিত হতনা কখনো। বিদেশ থেকে এসে দেশের আবহাওয়া পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে আমাদের ভাইবোনদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। শরীর প্রায়ই খারাপ হয়ে যেত। কতবার শিখা প্রিন্সিপাল ম্যাডামের রুমে গিয়ে আমার বাসায় ফোন করে জানিয়েছে যেন বাসা থেকে কেউ এসে নিয়ে যায় যদিও ও প্রিন্সিপাল ম্যাডামকে খুব ভয় পেত। প্র্যাক্টিকালের সময় সবার সাথে ধাক্কাধাক্কি করে ডেমন্সট্রেশন দেখতে পারতাম না। শিখা ছোটখাটো ছিল, তাই সামনে দাঁড়িয়ে দেখার সুযোগ পেত। পরে ও আমাকে আলাদা করে সব প্র্যাক্টিকাল শিখিয়ে দিত। ব্যাঙ, কেঁচো ধরতে ভয় পেতাম বলে ও ট্রেতে আটকে দিত। আর আমি? আমি ওর জন্য কিছুই করতে পারিনি। মাঝে মাঝে ফুলের মালা গেঁথে নিয়ে যেতাম বাগান থেকে। মালা গাঁথতে গাঁথতে ঢাকায় থাকার দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করতাম যখন ছোটবেলায় বান্ধবীরা দল বেঁধে শিউলী বা হিজলের মালা গাঁথতাম।

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, শিক্ষকদের ব্যাবহার সব মিলে পড়াশোনায় মন ছিলোনা মোটেও, পাশ করার আশা বা ইচ্ছা কোনটাই ছিলোনা। একদিন শিখা বাসায় এসে জানালো কলেজে ফর্মফিলাপ চলছে, আমি ফর্ম জমা দিয়েছি কি’না। আমি বললাম, আমি জানিইনা কিছু এ’ব্যাপারে। ও মা’র কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাকে নিয়ে গেল ফর্মফিলাপ করতে, নিজ হাতে ফর্ম ফিলাপ করল, টাকা জমা দিল, আমার ছবি ছিলোনা বলে কলেজের পাশের স্টুডিওতে নিয়ে ছবি তোলালো, পরদিন তারিখ শেষ তাই আমি কলেজে পৌঁছনোর আগেই দোকান থেকে ছবি নিয়ে অফিসে জমা দিয়ে দিল।

শিখা না থাকলে আমার পরীক্ষাই দেয়া হতনা। কিন্তু এই শিখাকেই হারিয়ে ফেললাম কয়েকবছর পর। তারপর কত যে খুঁজেছি, কতভাবে যে খুঁজেছি! পাইনি।

ওর মত পবিত্র মনের অধিকারী মেয়ে আমি দেখিনি বললেই চলে। সে আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেলেও জানি কারো জীবনে দীপ্তিময়ী হয়ে আছে নিশ্চয়ই। দোয়া করি সে যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক; আমার মত অন্য কারো জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে বিরাজ করুক।




আগামীকাল এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষা। পড়তে ইচ্ছা করছেনা। আর পড়ে কি হবে? গত দু’বছর আমি বই ছুঁয়েও দেখিনি, কোন পরীক্ষা পাশ করিনি, এখন পড়ে কি করব? বাবা এসেছে, মন ভালো। কিন্তু পাশ করা সুদূরপরাহত। রাত আটটা বাজে তখনো আমার পড়াশোনা করার কোন ইচ্ছা বা লক্ষণ নেই। বাবা বল্ল, “কাল কি পরীক্ষা?”
“ইংরেজী- ফার্স্ট আর সেকেন্ড পেপার।”
“পড়তে ইচ্ছে করছেনা?”
“না”।
“মনোপলি খেলবি।”
“হ্যাঁ”।
“চল”।
এইজন্যই আমার বাবাকে এত ভালো লাগে। কোন চাপাচাপি নেই। এসএসসিতে ছাড়া কোনদিন অংকে পাশ করিনি, বাবা কিছু বলেনি; ক্লাসের বই ছাড়া সব বই পড়তাম, বাবা সোৎসাহে কিনে দিত; কাল এইচএসসি পরীক্ষা আর পড়তে ইচ্ছা করছেনা দেখে বাবা মনোপলি খেলতে ডাকছে! বান্ধবীরা বলত, ‘এ’তো স্বপ্নের বাবা!’

রাত দশটা পর্যন্ত খেলে ঘুমাতে গেলাম। রাত একটার সময় ঘুম ভেঙ্গে গেল। শুয়ে শুয়ে চিন্তা করলাম পরীক্ষা দিলে কি হবে আর না দিলে কি হবে? সিদ্ধান্তে এলাম যদি পরীক্ষা দেই ফেল করার সম্ভাবনা ৯০% যেহেতু শুধু আউটনলেজের ভিত্তিতে পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু যদি ভাগ্যক্রমে পাশ করে যাই তাহলে আর এই কলেজের আঙ্গিনা মাড়াতে হবেনা। শেষের যুক্তিটা এত আকর্ষণীয় মনে হোল যে সাথে সাথে উঠে প্রায়নতুন বইগুলো নিয়ে বসে গেলাম। নৈঃশব্দের মধ্যে পড়া খুব ভালো হয়। সকাল ছয়টা পর্যন্ত পড়ে মনে হোল পাশ করলেও করতে পারি। তাই ঘুমাতে চলে গেলাম। আটটার সময় বাবা জিজ্ঞেস করল, “কি রে, পরীক্ষা দিবি?” আমি হাই তুলে বললাম, “দিয়ে দেখি”।

প্রথমদিন দু’পেপার ইংরেজী দিয়ে আমার সর্বাঙ্গে ব্যাথা। এত সময় বসে থাকা হয়নি বহুদিন। বাসায় এসে পড়ব কি আহা উহু করতে করতে প্রাণ যায়! আমার ছোটভাই আহমদের হাতে যাদু আছে। ও কিছুক্ষণ ঘাড় টিপে দেয়ার পর যেন আমি প্রাণ ফিরে পেলাম। কিন্তু ইলেক্ট্রিসিটি থাকেনা কোন পরীক্ষার সময়ই। তাই সন্ধ্যার পর ঘুমিয়ে আবার রাত বারোটায় ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসা, সকাল ছ’টা পর্যন্ত পড়ে আটটা পর্যন্ত ঘুম, তারপর পরীক্ষা দিতে যাওয়া। বাকী সব পরীক্ষা এভাবেই দিয়েছিলাম।




প্র্যাক্টিকালে বরাবরই কাঁচা ছিলাম। প্রথমদিন ছিল বায়োলজি। সকালে বোটানী আর বিকেলে জুওলজি। সকালে লাউয়ের ডাঁটার প্রস্থচ্ছেদ। কিছুতেই যথেষ্ট পাতলা হয়না। শিখা ধারে কাছে কোথাও নেই, আমার গ্রুপেই নেই। ল্যাব হেল্পার আংকেল এসে বললেন, “তুমি এত মোটা মোটা করে এগুলো কি কাটছ? তোমার পাশের ওকে দেখ, কি সুন্দর পাতলা পাতলা করে কাটছে!” পাশের বান্ধবীর লাউয়ের ডাঁটা কাটা দেখে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। কিছুক্ষণ পর দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার নিজের ট্রের দিকে তাকালাম। যেটা সবচেয়ে পাতলা মনে হোল সেটা মাইক্রোস্কোপের নীচে রেখে যা থাকে কপালে ভেবে দাঁড়িয়ে রইলাম। আমি ছিলাম দরজার পাশেই তাই এক্সটার্নাল স্যার এসে সবার আগে আমারটাই দেখলেন। দেখে উনি ভীষণ অভিভূত হয়ে গেলেন, এত সুন্দর কাটা উনি কমই দেখেছেন! আমি তো থ, বলে কি? উনি পুরো রুম দেখে এসে আবার আমার প্রস্থচ্ছেদের প্রশংসা করে চলে গেলেন। পরে জেনেছিলাম আমি যখন বান্ধবীর লাউয়ের ডাঁটা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলছি তখন আংকেল আমার লাউয়ের ডাঁটা কেটে রেখে গেছিলেন। আহা! কত মায়া ছিল মানুষটার মনে!

বিকেলে ছিল জুওলজি। শিখাদের গ্রুপ সকালে তেলাপোকা কেটে সব তেলাপোকা শেষ করে ফেলেছে। তাই আমাদের ভাগ্যে পড়ল ব্যাঙ। আমি মোটামোটি ব্যাঙ বেচারার বাইরেটা কেটে শেষ করেছি, নাড়িভুড়ি তখনো বের করতে পারিনি, শুনি আমার মৌখিক পরীক্ষার ডাক পড়েছে। ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার রোল সবার শেষে, অর্থাৎ আমার মৌখিক শেষ হলেই স্যার ব্যাঙ দেখতে আসবেন। আমি দরজার পাশেই, সুতরাং এসেও ব্যাঙ কাটা শেষ করার সময় পাবোনা। কিন্তু কিছুই করার নেই।

মৌখিক পরীক্ষার ব্যাপারে আমার কোনকালে ভয়ডর ছিলোনা। কিছু না পারলেও তো আর আমাকে মারতে মায় কামড় দিতে পারবেনা! গিয়ে দেখি স্যার অভিনব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিচ্ছেন। দু’জন করে একসাথে ডেকে তাদের একজনকে দিয়ে আরেকজনের পরীক্ষা নিচ্ছেন, কিছুক্ষণ পর যে টিকে যাচ্ছে তাকে তিনি নিজে প্রশ্ন করছেন। সাথের বান্ধবী ছিল লাজুক ধরণের তাই স্বাভাবিকভাবেই আমি টিকে গেলাম। প্রশ্নপর্ব শেষ করে স্যার গল্প করতে শুরু করলেন। বান্ধবী খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে লাগল কিন্তু আমার মাথায় কাজ করছে আমার ব্যাঙ-এর কি হবে?

পরীক্ষা শেষে যেতে যেতে দেখি স্যার আমাদের পিছু পিছু আসছেন। আমার তো মাথায় বাড়ি! এখন কি হবে? প্রথমেই স্যার এলেন আমার ব্যাঙ দেখতে, আমি চোখ বুজে রইলাম। শুনি স্যার বলছেন, “বাহ, যেমন ভাইভা তেমন ব্যাঙ কাটা!” আমি মনে মনে ভাবছি, “আমার ভাইভা তো এত খারাপ হয়নি!” উনি ম্যাডামের দিকে ফিরে বললেন, “ও ভাইভাতে খুব ভালো করেছে”। ম্যাডাম ভারী সুন্দর একটা হাসি দিলেন। আমি ভাবলাম এই আধাকাটা ব্যাঙ-এর মধ্যে কি দেখে উনি এত খুশী হয়ে গেলেন? অনুসন্ধান করার জন্য খুব সাহস করে টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার ব্যাঙ ভারী সুন্দর করে কাটা, নাড়িভুড়ি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে!পরে জানলাম আমাদের দেরী দেখে ম্যাডাম নিজেই আমার বাকী কাজ সম্পন্ন করেছেন! ধন্যবাদ ম্যাডাম!




সেদিন বিকেলে বাবার এক বন্ধু নববিবাহিতা আন্টিকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। আংকেল আমেরিকা ফিরে যাচ্ছেন, তাই। আন্টি মাত্র ডিগ্রী পরীক্ষা দিয়েছেন, পড়াশোনার সাথে তখনো সংশ্লিষ্ট। উনি আমাকে দেখে বললেন, “তোমার রেজাল্ট কি?” আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললাম, “কিসের রেজাল্ট?” উনি একটু ইতস্তত করে বললেন, “তুমি ইন্টার দিয়েছ না এ’বছর?” আমি বললাম, “জ্বী”। উনি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে বললেন, “এইচএসসি’র রেজাল্ট দিয়েছে তো চারদিন হোল। তুমি জানোনা?” এবার আমার অবাক হওয়ার পালা। আমি নিজেই ভুলে গেছিলাম যে পরীক্ষা দিলে রেজাল্ট আসে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়! আমার মত ঝাড়াহাতপা ছাত্রী মনে হয় আল্লাহর দুনিয়াতে আর নেই!

তখন বিকেল হয়ে গিয়েছে, বাইরে বৃষ্টি, অন্ধকার। তবুও ভাবলাম একবার গিয়ে দেখে আসি। কলেজে গিয়ে দেখি দারোয়ান ভাই ছাড়া আর কেউ নেই। উনি আমাকে দেখে বললেন, “সবাই এসে রেজাল্ট দেখে গিয়েছে, আপনিই শুধু আসেননি। আমি তো মনে করেছিলাম আপনার কিছু হয়েছে। আপনি বেঁচে আছেন দেখে আশ্বস্ত হলাম”। বলে কি?! আমি তাড়াতাড়ি ঘনিয়ে আসা অন্ধকারে রেজাল্ট দেখার জন্য নোটিসবোর্ড দেখতে গেলাম। সেকেন্ড ডিভিশন চেক করলাম, আমার নাম্বার নেই- না থাকারই কথা। থার্ড ডিভিশন চেক করলাম, ওখানেও আমার নাম্বার নেই। কি আর করা? দারোয়ান ভাইকে জানালাম আমি ফেল করেছি। বাসায় ফিরে দেখি মেহমান বসে আছেন আমার রেজাল্ট জানার জন্য- সবাইকে জানালাম আমি ফেল করেছি। আমাকে এত অবিচলিত দেখে মেহমান নিজেই ঘাবড়ে গেলেন। মা খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে তাঁদের পানি এগিয়ে দিয়ে বললেন, “পানি খেয়ে মিষ্টি খান”।

তার তিনদিন পর পেপারে পড়ছি সম্পূর্ণ কুমিল্লা বোর্ডে প্রায় ২ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে মাত্র ২০০০ ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে। আমি আর কোথা থেকে পাশ করব? এমন সময় ওর ও লেভেল পড়ুয়া বান্ধবী মুনমুনকে নিয়ে শিখা এসে উপস্থিত, “মিষ্টি খাওয়াও”। আমি হাসতে হাসতে বললাম, “এটা কি নতুন সিস্টেম নাকি?” শিখা বল্ল, “নতুন সিস্টেম মানে?” “এই যে, ফেল করে মিষ্টি খাওয়ানো!” ও চোখ কপালে তুলে বল্ল, “বল কি?” “আমি পাশ করিনি তো!” আমি সত্যি বলছি বুঝতে পেরে ও আমাকে কান ধরে চেয়ার থেকে ওঠালো, ঐভাবেই কলেজে নিয়ে গেল, নোটিসবোর্ডের সামনে দাঁড় করিয়ে দেখাল, “এটা কি?” অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। বুঝতে পারলাম না আমি জেগে আছি না ঘুমিয়ে। তারপর শিখার প্রশ্নবোধক দৃষ্টির সামনে আমতা আমতা করে বললাম, “আমি তো ফার্স্ট ডিভিশন চেক করিনি!”

এই ঘটনা কি করে হোল আমি আজও জানিনা। আল্লাহর রহমতের যে কোন সীমা নেই তা সেদিন আমি এই আলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি। তাই তো তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই প্রত্যেক কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি”। আমার বাবামাকে তাঁদের উদার মনোভাব এবং বিশ্বাসের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

1 comment:

  1. হাহাহহাহাহাহহাহাহাহাহ!!!!!!

    ReplyDelete