দাদার কাছ থেকে এই চিঠিটা পাবার কিছুক্ষণের ভেতর সব আত্মীয়স্বজনের ভেতর প্রচন্ড আলোড়ন সৃষ্টি হোল, ‘Trial ended today and the jury returned a guilty verdict for the charge of Felony Murder In the 1st Degree that carries a Life Sentence with no possible parole!!!!! Justice has prevailed and that scum will never be back on the streets again!!! God is Great!!’
আমি সবসময়ই একটু অন্যরকম। আমার প্রতিক্রিয়াগুলো কেমন যেন অদ্ভুত। আমার কল্পনা এবং স্মৃতিও তাই। আমি কোন চিত্র ঝাপসা বা অস্পষ্ট দেখিনা বরং প্রতিটা বর্ণ, শব্দ এমনকি গন্ধ আমার মাথায় স্পষ্ট খেলে যায় যেন আমি চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। আশ্চর্যজনকভাবে এই খবর শুনে আমার মাথায় যে চিত্রটা ভেসে উঠল তা বিচারকক্ষের বা খুনীর বা কারাকক্ষের নয়। আমি দেখলাম, তখন সকাল সাতটা বা সাড়ে সাতটা, বিটিভিতে শিশুদের অনুষ্ঠান দেখাচ্ছে, বাবা বিছানায় শুয়ে আলসেমি করছে, পাশাপাশি দু’টো বেডরুমের মধ্যখানে দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকতে ঢুকতেই আমার চাচা আমাকে ক্ষ্যাপাতে শুরু করল, ‘অ্যাই, আবু ডুবাইয়ের মেয়ে, দেখ ছোটছোট বাচ্চাগুলো কি সুন্দর করে হাট্টিমা টিম গান গাচ্ছে, তুই গাইতে পারবি?’
বহুদিন পর মনে পড়ল, আমি ছোটবেলায় তোতলা ছিলাম। তখন আমার বয়স পাঁচ, আবুধাবী থেকে ফিরেছি, বাবা আর চাচা দু’ভাই একই ফ্ল্যাটে থাকে, মা আর চাচীর খুব ভাব, আমার আর আমার চাচাত বোনেরও। ঝগড়া যত চাচার সাথে, কারণ আমার তোতলামী নিয়ে সে আমাকে ক্ষ্যাপায়।
তবে চাচার হৃদয়টা ছিল আকাশের মত বিশাল। সে বিদেশ গেলে নিজের মেয়ের জন্য যে খেলনা নিয়ে আসত, আমার আর সমবয়সী ফুপুর জন্য একই খেলনা নিয়ে আসত। ঈদের সময় আমার আর ওর মেয়ের জন্য একই জামা কিনত, মা চাচী সবার জন্য একই ধরণের শাড়ি কিনে আনত। খাবারের ব্যাপারে ছিল ভীষণ সৌখিন, বাজারের সেরা জিনিসটাই কিনত, দাবী ছিল রান্না মজা হতে হবে, খাবার গরম গরম বেড়ে দিতে হবে, নইলে বাটি ছুঁড়ে মারত। এছাড়া ছিল দারুণ খোশমেজাজী। বাসায় বড় বড় পার্টি দেয়া, জোরসে গান ছেড়ে দেয়া, সপরিবারে লেটেস্ট সিনেমা দেখতে যাওয়া (তখন সিনেমা দেখতে যাওয়া আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিল, ডিভিডি আবিস্কৃত হয়নি), এই ছিল জীবন।
দু’একবছর পর, একদিন খুব ভোরে কে যেন দরজায় বেল দিল, আমরা তখন আলাদা ফ্ল্যাটে থাকি। আধোঘুমে শুনতে পেলাম চাচী বলছেন, ‘ভাবী, আমি ওকে ছেড়ে চলে গেলাম’।
কি হয়েছিল জানিনা। এর পরেও চাচীর সাথে দেখা হয়েছে তাঁর বাবার বাসায়, বড় হয়ে জিজ্ঞেস করেছি, ‘এমন কেন করলেন?’
বললেন¸ ‘রাগের মাথায় চলে এসেছিলাম, যখন বুঝেছি ভুল করেছি তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে’।
সেই ফূর্তিবাজ লোকটা ক’দিনের ভেতর কোথায় যেন উবে গেল। আমরা চলে গেলাম আবুধাবী। তখন তো আর এখনকার মত স্কাইপ ছিলোনা, ইচ্ছে হলেই বোতাম টিপে দেশবিদেশে ফোনও করা যেতনা, ফোনের ওপর আঙ্গুলের জন্য খাঁজকাটা চাকতিটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্রথমে ট্রাঙ্ক কল বুক করতে হত, তাতে অনেক পয়সা খরচ হত কিন্তু লাইন নিরবিচ্ছিন্ন ছিলোনা, তাই লাইন পেলে বড়রা দ্রুত কথা সারত, আজকালকার মত বাচ্চারা লং ডিস্ট্যান্স ফোনে কথা বলবে এটা কল্পনাই করা যেতনা।
বেশ কিছুদিন পর যখন ছুটিতে দেশে গেলাম, দেখলাম চাচা আবার সংসারী হয়েছে। আমাদের বাপচাচারা সবাই স্ত্রীদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল। তবে একবার কষ্ট পাওয়ার কারণেই হয়ত চাচীর প্রতি চাচা ছিল অসম্ভব যত্নবান। দেখে ভাল লাগল মানুষটা আবার সুখি হয়েছে। একদিন বিকালে বাবা আর চাচা দাদুর বাসার গোল টেবিলটার দু’পাশে বসে চা খাচ্ছে, এই টেবিল আর ফ্ল্যাট দু’টোই আমাদের ছিল বিদেশ যাবার আগে। ওরা খাচ্ছে যতটা, গল্প করছে তার চেয়ে বেশী। আমি সবসময়কার মত বাবার গা ঘেঁষে বসে আছি। হঠাৎ চাচার কি মনে এলো কে জানে, বলল, ‘মা রে, একটু এদিকে আয় তো’।
কাছে যেতে আদর করে কোলে বসিয়ে বলল, ‘মাগো, আমাকে বাপ ডাক’।
ভীষণরকম অভিমানী ছিলাম, কিছুতেই বাপ ডাকলাম না, বললাম, ‘তোমার মেয়েকে তুমি তাড়িয়ে দিয়ে আমাকে বাপ ডাকতে বলছ?’
আজ মনে হয় ঐ ছোট বয়সে কি নিষ্ঠুর একটা কথা বলেছিলাম! শুনতে পেয়েছি ওর কন্ঠের হাহাকার, কিন্তু বুঝতে পারিনি ওর বুকের ভেতর শুন্যতাটুকু। আজ যদি ও আমাকে বাপ ডাকতে বলত তাহলে নির্দ্বিধায় বাপ ডেকে ঐ শুন্যতাটা পূরণ করার চেষ্টা করতাম।
যখন দেশে ফিরে এলাম তখন এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি, উল্টোপাল্টা অবিবেচক কথা বলার বয়স পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আমি কি জানি বাংলাদেশে কিসের কেমন দাম? ছিলাম ধানমন্ডিতে ফুপুর বাসায়। একদিন ভোর সাড়ে ছ’টার দিকে চাচা ফোন করে বলল, ‘আজ দুপুরে তোরা আমাদের সাথে খাবি, বল তোর কি খেতে ভাল লাগে’।
সরলমনে উগড়ে দিলাম, ‘চিংড়ি মাছ’।
ফোন রাখতেই বাবার বকা, ‘ওকে তুমি চিংড়ি মাছের কথা বলতে গেলে কেন? বাংলাদেশ কি আবুধাবীর মত? এখানে বড় চিংড়ির অনেক দাম’।
মনটা খারাপ হয়ে গেল যে আমার জন্য একজন মানুষ এতগুলো টাকা নষ্ট করবে অথচ তখন ও অলরেডী বাজারে চলে গেছে, তখনো মোবাইলের যুগ আসেনি যে ফোন করে বলে দেব চিংড়ি মাছ আমার তেমন পছন্দ নয়। দুপুরে ওর বাসায় গিয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছি, বুঝে হোক বা না বুঝে, অন্যায় তো হয়েই গেছে। আমার প্যাঁচামুখ দেখে চাচা আমাকে হাসিয়ে দিল, ‘দাড়া, এক্ষুনি আমি মিয়াভাইকে বোঝাচ্ছি, আমার মেয়েটাকে শুধু শুধু বকা দিল!’
টেবিলে যখন খাবার দেয়া শুরু হোল তখন বুঝলাম আমার ভয়টা অমূলক ছিল। আমরা সবাই হাত ধুয়ে বসে আছি কিন্তু খাওয়া শুরু করতে পারছিনা, কারণ খাবার আসছে তো আসছে তো আসছে তো আসছে তো আসছে তো আসছে তো আসছে... আসতে আসতে একুশ পদ এলো। চাচা যেখানে নিজেই পাগল সেখানে আমার চিংড়ি মাছের আবদারে তেমন বিশেষ উনিশবিশ হয়েছে বলে মনে হোলনা। ভোরে ওঠা এবং ভুরিভোজের ডাবল ক্লান্তিতে তখনই আমি কুপোকাত।
ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার আরেক চাচা এসেছে। সে দেখতে হুবহু বাবার মত, খেয়াল করে না দেখলে হঠাৎ চিনে ওঠা যায়না। আমাদের আত্মীয়স্বজন পৃথিবীর নানান প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে অনেক আত্মীয়কেই আমরা চিনতাম না, তবে এই চাচা আমার ছোটবেলায় কিছুদিন আবুধাবী ছিল বলে ওকে চিনতাম। আমার ছোট ভাইটা অন্য ঘরে খেলছিল। ক্ষণিকের জন্য এ’ঘরে উঁকি দিতে এসে হা হয়ে বলে ফেলল, ‘আরে! দুইটা বাবা!’
বাবা চট্টগ্রামে বাবার দাদার ১৯৪৮ সালের বাড়ীটা খুব শখ করে কিনেছিল। ব্রিটিশ আমলের বাড়ী, বাইরে লাল ইট লাগানো ইয়া মোটা মোটা দেয়াল, ভেতরের দেয়ালের নিচের অংশ ফ্লোরের মত লাল সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো, ওপরের অংশে চুনের ওপর হাল্কা রঙ করা। অদ্ভুত ডিজাইনের এই বাড়ীর প্রত্যেকটি ঘরে অন্তত তিনটি করে দরজা আর কমপক্ষে দু’টি করে জানালা, চার জানালার ঘরও ছিল, দেখে মনে হয় যেন এই বাড়ি যারা তৈরী করেছিল তারা ‘প্রাইভেসী’ শব্দটার সাথে পরিচিত ছিলোনা। বাইরের গেটের পর বাইরের ঘর, তারপর বাগান, তারপর ভেতরের ঘর যেখানে আমরা থাকব, তারপর পেছনে রান্নাঘর আর বাথরুম। মজার ব্যাপার হোল রাস্তা থেকে পেছনের রান্নাঘর পর্যন্ত সরলরেখায় দেখা যায়! বাবা এই বাড়ীতে প্রচুর রেনোভেশন করে, গেট সরিয়ে, ভেতরের ঘরে রান্নাঘর আর বাথরুমের ব্যাবস্থা করে, কিছু দরজা জানালা কমিয়ে বাড়িটিকে বাসযোগ্য করে তুলল। প্রথম মেহমান হয়ে এল আমার চাচা। তারপর সপরিবারে বা একা আরো কতবার যে এসেছে!
দাদার থেকেই এই স্বভাব পেয়েছে কিনা জানিনা তবে আমার বাপচাচারা সবাই শিকার করতে ভালোবাসে। আমি হবার পর আমার দোহাই দিয়ে মা বাবার শিকার বন্ধ করে দিল। তবে আমি বড় হবার পর কয়েকবার মা’র বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে বাবা আমাকে নিয়ে পাখী বা মাছ শিকারে গেছে, আমি নিজেও এ'কাজে খুব একটা খারাপ না। একবার, বাবা তখন আমেরিকায়, চাচা বান্দরবানে শিকারে গিয়ে বনমোরগ নিয়ে এলো। বাবার শিকার করা বক, ডাহুক, পায়রা খেয়েছি যখন এগুলো যত্রতত্র পাওয়া যেত। তবে বনমোরগ এর আগে বা পরে আর খাইনি। এর স্বাদ আর গন্ধ এখনও মনে আছে।
আরেকবার বাসায় মেরামতের কাজ করাচ্ছি, দিনরাত ঠুকুরঠাকুর, ঠুসঠাস, আজ এই রুমে ঘুমাই তো কাল ঐ রুমে, রান্না করতে গেলে ঝোলে বালি পেয়ে শোকর করি যে পেরেক পাইনি। একদিন আর না পেরে রাতটা বিছানায় ঘুমালাম। সকালে বুড়োমিস্ত্রি শুনে মাথায় হাত, একটা লাঠি দিয়ে ছাদের পলেস্তারায় ছোঁয়াতেই এত্তবড় এক খন্ড প্লাস্টার খসে পড়ল ঠিক বালিশ বরাবর। মিস্ত্রী আবেগে কেঁদে ফেলল, ‘অবুক! এই প্লাস্টার যদি আমার মা’র মাথায় পড়ত তাহলে তো আমার মা মরে যেত!’
তাঁকে আশ্বস্ত করলাম যে মরার আরো অনেক উপায় আছে, সুতরাং, উনি যদি আমাকে বাঁচাতে চান তাহলে যেন দ্রুত আমার রুমের ছাদটা ঠিক করেন। এই অবস্থায় একদিন চাচা ঢাকা থেকে এসে উপস্থিত। আমাকে দেখে বলল, ‘কিরে, তোর তো চেহারা সুরতের অবস্থা নেই, তোর বাবামা দেখলে হার্টফেল করবে (আমার পরিবার তখন ইন্ডিয়াতে), চল তোকে সীবীচে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি’।
দেশে ফিরেছি তখন বেশ কয়েকবছর হয়েছে, কিন্তু কোনদিন পতেঙ্গা যাওয়া হয়নি, চাচাই প্রথম নিয়ে গেল। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরিয়ে, সূর্যাস্ত দেখিয়ে, বিরিয়ানি খাইয়ে বাসায় দিয়ে চলে গেল নিজের গন্তব্যে।
আমার বিয়ের কথাবার্তা নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। বাবার তখন পোস্টিং ইরানে। চাচা সুন্দরভাবে হস্তক্ষেপ করে ব্যাপারটা সামাল দিয়েছিল। যাবার সময় এসে বলল, ‘মা রে, যেকোন দরকার লাগলেই আমাকে একটা কল দিবি, আমি সাথে সাথে গাড়ী নিয়ে ঢাকা থেকে চলে আসব’।
আমি জানতাম সে আসবে, ছোটবেলা থেকে দেখেছি রোদ বৃষ্টি ঝড়তুফানের তোয়াক্কা না করে ঢাকা চট্টগ্রাম আসা যাওয়া করতে। ভাগ্য ভাল ছিল, আর ডাকার প্রয়োজন পড়েনি, কিন্তু এই বলাটাও আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার ছিল।
আমার বিয়েতে সবাইকে মানা করে দিয়েছিলাম কেউ যেন কিছু না দেয়। কিন্তু চাচা বড্ড চালাক, বেছে বেছে এমন বস্তু বের করল যেটা আমি কিছুতেই মানা করতে পারবনা। আমার ছিল ক্রিকেট খেলা দেখার নেশা, সে আমাকে একটা বিশাল স্ক্রীণের টিভি এনে দিয়ে বলল, ‘এটা আমি তোকে দিলাম, এবার তুই নিয়ে যাবি না রেখে যাবি তোর ইচ্ছে’।
কি প্যাঁচটাই না দিল! টিভিটা নিয়ে গেলাম সাথে, কিন্তু জীবনের বাস্তবতা আর টিভি দেখার অবসর দেয়নি বহুবছর।
বিয়ের পর প্রায়ই ঢাকা যাওয়া হত, গেলেই চাচার বাসায় ঘুর দিতাম। একবার ও এলো চট্টগ্রামে, আমার শ্বশুরবাড়িতে, বিদায় নিতে, আমেরিকা চলে যাচ্ছে। কপালে চুমু দিয়ে বলল, ‘আসি মা, ভাল থাকিস’।
কয়েকমাস পর ফিরে এল পায়ে গুলি খেয়ে। দোকানে কাজ করছিল, ডাকাত এসে লুট করে চলে যাবার সময় গুলি করেছে, গায়ে যত জোর আছে সব দিয়ে লাফ দিলো, তাই গায়ে না লেগে গুলি পায়ে লেগেছে। তবু জীবিকার টান ওকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেল আমেরিকা। বাড়ি কিনল, ছেলেদের নিয়ে গেল, ওদের লেখাপড়া করাল, তারপর ছেলেরা চাকরী শুরু করল। কয়েকবছর পর আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। দু’টো পুঁচকে কালো ছেলে দোকানে ঢুকে লুটপাট করছিল, ও ছিল অতিরিক্ত সাহসী, প্রতিবাদ করতেই ওরা গুলি করল, কিন্তু এবার গুলি লাগল গায়ে। তবু সে নাছোরবান্দা, ঐ আহত অবস্থায় সে ছেলেগুলোকে ধাওয়া করল। পুলিশ এসে ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেল কিন্তু অপারেশনের মাঝখানেই সে ডাক্তারকে ধোঁকা দিয়ে, পরিবারকে কিছুমাত্র না বলে, সবাইকে অবাক করে দিয়ে, কারো কাছে বিদায় না নিয়েই চলে গেল।
ওর হত্যাকারী ছেলেটার ২৫ বছরের জেল হয়েছে, প্যারোলেও বেরোতে পারবেনা। আমাদের পরিবারের সবাই খুশী, সুবিচার হয়েছে। একটা ছেলে একটা ডাকাতির দোষ ঢাকতে গিয়ে একটা খুন করে শুধু একটা জ্বলজ্যান্ত মানুষকেই নয়, তাঁর পরিবারের সদস্যদের অনেক স্বপ্ন অনেক সাধকেও মেরে ফেলল। বিনিময়ে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ২৫টা বছর এখন কেটে যাবে কয়েদখানায়, প্রায় পঞ্চাশ বছর বয়সে সে বেরিয়ে আসবে এক অপরিচিত পৃথিবীতে। কি লাভ হোল তার? কিন্তু আমাদের মানুষটা কি আর ফিরে আসবে? ওর ছেলেমেয়েরা কি আর আমাদের মত বাবার গা ঘেঁষে বসতে পারবে? চাচী কি ওকে ওর পছন্দের তরকারী রান্না করে দিয়ে উৎসুক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন ওর মুখের ভাব কি বলে? ও কি আর আমাকে জড়িয়ে ধরে বলবে, ‘মাগো, আমাকে বাপ ডাক’?
No comments:
Post a Comment